ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যের গোডাউন থেকে ৪৯ বস্তা নকল সার জব্দ | Nasirnagar News | Titas Tribune News

 


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের গোডাউন থেকে ৪৯ বস্তা নকল টিএসপি ও ডিএপি সার জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন।

বুধবার সন্ধ্যায় নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের দাতমন্ডল গ্রামে মেসার্স কাউছার এন্টারপ্রাইজের গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে এসব সার উদ্ধার করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রবিউস সারোয়ার। তাকে সহযোগিতা করেন কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন এবং নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুতুল রানী।

দীর্ঘদিনের অভিযোগের সত্যতা মিলল
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দাতমন্ডল গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা মো. কাউছার মিয়া দীর্ঘদিন ধরে নকল সার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় কৃষকরা বহুবার অভিযোগ করলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতার গোডাউন থেকে ৪৯ বস্তা নকল সার উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযানের সময় মো. কাউছার মিয়া পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

অভিযানে গোডাউনের কর্মচারী রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে।

কৃষকদের ক্ষোভ
দাতমন্ডল গ্রামের কয়েকজন কৃষক, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে মো. কাউছারের কাছ থেকে সার কিনেছি। কিন্তু জমিতে এই সারের কোনো সুফল পাচ্ছিলাম না। পরে বিষয়টি কৃষি কর্মকর্তাকে জানাই। যাচাইয়ের পর দেখা যায়, এগুলো নকল।”

প্রশাসনের বক্তব্য
নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পুতুল রানী বলেন, “৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের গোডাউনে নকল সার বিক্রির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সারগুলো জব্দ করে।”

উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন বলেন, “আমি যোগদানের পর থেকেই শুনছিলাম, নাসিরনগরের কিছু এলাকায় নকল সার বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নকল সার জব্দ করেছি।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রবিউস সারোয়ার জানান, “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪১ ধারা অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।”

উপসংহার
উপজেলা প্রশাসনের এই পদক্ষেপ স্থানীয় কৃষকদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এলেও অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

أحدث أقدم